বইমেলা যেন জনসমুদ্র!

বইমেলা যেন জনসমুদ্র!

অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৬তম দিন ছিল আজ শুক্রবার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বই প্রেমীদের ভিড়ে যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণ। সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার বিকাল থেকেই শিশু-কিশোর, তরুণ- তরুণী, লেখক দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ। যতই বিকাল ঘনিয়ে আসছিল ততই ভিড়ের মাত্রা বাড়তে থাকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সন্ধ্যার দিকে ভিড়ের মাত্রা এমন পর্যায়ে চলে যায় যেন হাঁটাই ধায় হয়ে পড়েছিল!
বইমেলা যেন জনসমুদ্র! মেলার প্রতিটি স্টলেই ঢুঁ মেরে দেখছেন বইপ্রেমীরা। কেউ বই দেখছেন, কেউবা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে সময় কাটাচ্ছেন আবার কেউ কেউ বই কিনছেন।প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করা শাহারিয়ার আহমেদ বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন, তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় এলাম। সপ্তাহের অন্যদিনে ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছে থাকলেও আসা হয় না। তাই আর দেরি না করে সবাইকে নিয়ে মেলায় এলাম। ছেলে মেয়েদের জন্যই বেশির ভাগ বই কিনেছি। নিজেরও পছন্দের কিছু বই কিনেছি।তিনি বলেন, বাঙালীর প্রাণের মাস ফেব্রুয়ারি। এ মাসের জন্য আমরা বছরজুড়ে অপেক্ষা করি। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও সময়ের কারণে বইমেলায় নিয়মিত আসা হয় না। মেলার নিরাপত্তা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। ব্যাংকার সায়মা রহমান মেলায় এসেছেন উত্তরা থেকে। জানতে চাইলে তিনি বিবার্তাকে বলেন, এবার প্রায় ৫ হাজার টাকার বই কিনবো। বেশকিছু বইয়ের তালিকা নিয়ে এসেছি। শুধু নিজের জন্যই নয়। আত্মীয়-স্বজনের জন্যও বই কিনবো।

শুক্রবার সকাল থেকেই বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মেলায় আসে শিশুরা। ছোটমণিদের পদচারণায় মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। ছুটির দিন থাকায় ছিল বইপ্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়। বিশেষ করে শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ছোটদের মজার মজার সব বইয়ের স্টল এবং বিনোদন কেন্দ্র নিয়ে সাজানো হয়েছে শিশু চত্বর। শিশু চত্বরে শিশুরাজ্য স্টলে দেখা গেল কচিকাঁচাদের উপচে পড়া ভিড়। শিশু-কিশোরদের বাড়তি আনন্দ যুগিয়েছে সিসিমপুর স্টল। যেখানে বাচ্চাদের জন্য আকর্ষণীয় সব মজার মজার বই সাজানো রয়েছে। যারমধ্যে রয়েছে ‘হালুমের গ্রামে যাওয়া, টুনটুনি যখন বড় হবে, ঠাকুরমার ঝুলি, সিসিমপুরে দাদা ভাই আর আমি টুনটুনি, মিতু একদিন সিসিমপুরেসহ নানা ধরণের সব বই। এছাড়া বাংলা একাডেমির শিশু-কিশোর প্রকাশনা, ছোটদের বন্ধু ঝিঙেফুল, কিশোর ভুবন, শিশুবেলা, শিশুঘর প্রকাশনী, টোনাটুনিসহ ছোটদের বইয়ের অনেকগুলো স্টল রয়েছে।

বিগত কয়েকদিনের বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশকরা। শুক্রবার থেকে আরো বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তারা। কোন ধরণের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিভিন্ন লেখকের উপন্যাসের বই। তবে হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের চাহিদা একটু বেশি বলে জানান তারা। গ্রন্থমেলা কমিটির সাথে কথা বলে জানা গেছে, বইমেলায় ১৬তম দিন পর্যন্ত প্রায় ২১৫০টি নতুন বই এসেছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৬৫০টি কবিতার বই বলে জানান তারা। এবারের গ্রন্থমেলায় গবেষণাধর্মী ও ধর্মীয় বই কম এসেছে বলে তাদের সূত্রে জানা যায়।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment